লেখক - মাফুজুর রহমান সাহান।
"মা"
আল্লাহর দেওয়া শ্রেষ্ঠ নেয়ামত।
খুব ভালোবাসি মা তোমাকে।
১ম.
খুব ভালোবাসি মা তোমাকে।
১ম.
‘মা’ একটি ছোট্ট শব্দ। এই শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে আছে পৃথিবীর সব মায়া, মমতা, অকৃত্রিম স্নেহ, আদর, নিঃস্বার্থ ভালোবাসার সব সুখের কথা। চাওয়া-পাওয়ার এই পৃথিবীতে বাবা-মায়ের ভালোবাসার সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা চলে না। মায়ের তুলনা মা নিজেই। মায়ের মতো এমন মধুর শব্দ অভিধানে দ্বিতীয়টি আর নেই। নদীর তলদেশে তো যাওয়া যায় কিন্তু মায়ের ভালোবাসার গভীরতা পরিমাপ করা যায় না। ‘মা’ যেন সীমার মাঝে অসীম।
২য়.
মায়ের স্পর্শেই সন্তান ধীরে ধীরে পূর্ণ মানুষ হয়ে ওঠে। পৃথিবীর সব ধর্মেই মায়ের মর্যাদাকে উচ্চাসীন করেছে। ৩৬৫ দিনের প্রতিটি সেকেন্ডেই মনে করতে চাই ‘মা’ শব্দটিকে। মা, আম্মা, আম্মি, মাম্মি সন্তানেরা যে যেভাবে ডাকুক; এই শান্তির ডাক শতকিছুর বিনিময়েও অন্য কোনো শব্দের সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। বিভিন্ন ভাষাভাষীর সন্তানের কাছে ‘মা’ ডাক শব্দটি কতই না আপন। প্রথম দিন থেকে জীবনের শেষ পর্যন্ত সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসার কোনো পরিবর্তন হয় না। মা তাই আমাদের কাছে অতুলনীয়, তিনি অনন্য। কিন্তু সেই অতুলনীয় মানুষটিকে অনেক সময় তাঁদের সন্তানেরা উপযুক্ত প্রতিদান দিতে ব্যর্থ হয়। তখনো মা আগের মতোই তাঁর সন্তানের জন্য মঙ্গল কামনা করেন।
৩য়.
‘মা’ তোমার কথা মনে হলেই মনে পড়ে তোমার কষ্টের কথা।অনেক ছোট ছিলাম মা, অনেক অবুঝ ছিলাম। তাই বিনা কারণেই অনেকভাবে কষ্ট দিয়েছি তোমাকে। পড়াশোনা করতাম না, স্কুলে যেতে চাইতাম না, সাইকেল নিয়ে সারা দিন রোদে রোদে ঘুরতাম। আরও অনেক কিছু করেছি, যেগুলো বলে শেষ করা যাবে না। জানি না সবকিছু তোমার মনে আছে, না ভুলে গেছ অনেক কিছু। আমার কিন্তু সবই মনে আছে মা। কিছুই ভুলিনি আমি।
৪র্থ.
সময় কত দ্রুত চলে যায় মা। তোমার সেই দুষ্টু ছেলেটা এখন কত বড় হয়ে গেছে, আর তুমিও পেরিয়েছ ৫০টি বসন্ত। কোনো দিন কি তোমাকে এক টুকরা সুখ দিতে পেরেছিলাম মা? কেবলই মনে পড়ে তোমার সঙ্গে বিনা কারণে রাগ করে কথা বলার মুহূর্তগুলোর কথা। মা, ছোট আমি, অবুঝ আমি তোমার কাছে, আমি তোমার সন্তান, মা। তোমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার মতো যোগ্যতাটুকুও আমার নেই।
৫ম.
মা তোমাকে খুব মনে পড়ে, খুব মিস করি।
পড়াশোনা তাগিদে চলে আসছি তোমার থেকে অনেক দুর, সেই ছোট কাল থেকে বলতেছো বাবা মানুষের মতো মানুষ হতে হবে আমার স্বপ্ন পুরন করতে হবে, তোকে নিয়ে আমি অনেক স্বপ্ন দেখি। যখন যেটা চাই মা তখন সেটা পাঠিয়ে দেয়। ছোটকাল থেকে কোনো কিছুর কমতি রাখে নাই আমার মা।
আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন ছিলো বাইক সেই বাইক এর কথা বলার সাথে সাথে মা কিনে দিছে। কোনো কিছুর কমতি রাখে নাই আমার মা। আমার মা সবসময় বলতো এখনো বলে যে বাবা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিক মতো পড়িস, নামাজ বাদ দিস না কখনো।
এখনো প্রত্যেকদিন আগে মা কল দিয়ে খোঁজখবর নেয়, মা তো মা ই।
মায়ের সাথে কথা বলার সময় চোখের কোণে অজান্তে পানি চলে আসে। প্রতিমুহূর্ত মায়ের কথা বেশি মনে পড়ে। কিছুদিন আগে খুব অসুস্থ হয়ে পড়ি / শরীর দুর্বল হয়ে যায়।
সাথে সাথে ডাক্তার দেখাইতে গেছি ম্যাম বলে তুমি তো মনে বাড়ির কথা টেনশন করো, আমি বলি জি ম্যাম মায়ের কথা পড়ে শুধু, উনি বলে দেখো শক্ত হতে হবে ধৈর্য ধরতে হবে এখানে চারটা বছর কাটানো লাগবে, আর বলে টেনশন করা যাবে না একদম না হয় শরীর খারাপ হবে আবার।
প্রায় সময় একটা কথা ভাবি যে মায়ের থেকে দুরে থাকার পর এতটা খারাপ লাগতেছে আর সে মা যখন এ দুনিয়া থাকবো না তখন কী করবো? মা কে ছাড়া কীভাবে থাকবো?
মাঝে মাঝে মনে মনে ভাবি,
মা, তুমি আমার আগে যেও না গো মরে
মা, তুমি আমার আগে যেওনা গো মরে
আমি কেমন করে দেবো মাটি তোমার কবরে?
আমি কেমন করে দেবো মাটি তোমার কবরে?
মা, তুমি আমার আগে যেও না গো মরে
মা, তুমি আমার আগে যেওনা গো মরে
দশ মাস, দশ দিন ধরে যে আমাকে
রেখেছ মা, তোমার জঠরে
তুমি আমার আগে যেও না গো মরে
অনেক আদরের ছেলে তোমার আমি
একলা ফেলে দুরে থাকো না
আমি কেমন করে দিন কাটাবো, মা?
তোমায় ছেড়ে ভেবে দেখনা
একবার তুমি ভেবে দেখনা
এই পৃথিবীর আলো আমায় যে দেখালো
তাকে মাটি দেবো কি করে
তুমি আমার আগে যেও না গো মরে
আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা হলেন আমার মা। মায়ের কাছে আমি চিরঋণী। আমার জীবনের সমস্ত অর্জন তারই কাছ থেকে পাওয়া নৈতিকতা, বুদ্ধিমত্তা আর শারীরিক শিক্ষার ফল।
তিন রকম দোয়া নি:সন্দেহে কবুল হয়। মজলুমের দোয়া,মুসাফিরের দোয়া আর সন্তানের জন্য পিতা-মাতার দোয়া।
মা হল পৃথিবীর একমাত্র ব্যাংক, যেখানে আমরা আমাদের সব দুঃখ, কষ্ট জমা রাখি এবং বিনিময়ে নিই বিনা সুদে অকৃত্রিম ভালবাসা।
৬ষ্ট.
ইসলাম মাকে যে সম্মান দিয়েছে
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনের অন্যত্র ঘোষণা করেন, 'আমি তো মানুষকে তার পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। জননী সন্তানকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেন এবং তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে; সুতরাং আমার (আল্লাহর) প্রতি এবং তোমার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। প্রত্যাবর্তন তো আমারই কাছে। ' (সুরা-৩১ লুকমান, আয়াত: ১৪)।
মায়ের চেয়ে আপনজন পৃথিবীতে আর কেউ নেই। পৃথিবীতে সবচেয়ে মধুর শব্দটি হচ্ছে মা। কবির ভাষায়, ‘যেখানে দেখি যাহা, মায়ের মতো আহা, একটি কথায় এতো শুধা মেশা নাই।’
জগৎসংসারের শত দুঃখ-কষ্টের মাঝে যে মানুষটির একটু সান্ত্বনা আর স্নেহ-ভালোবাসা— আমাদের সব বেদনা দূর করে দেয়, তিনি হলেন মা। প্রতিটি মানুষ পৃথিবীতে আসা এবং বেড়ে ওঠার পেছনে প্রধান ভূমিকা একমাত্র মায়ের। মায়ের তুলনা অন্য কারো সঙ্গে চলে না।
মায়ের ত্যাগ-তিতিক্ষা তুলনাহীন
সন্তানের জন্য তুলনামূলকভাবে মা-ই বেশি ত্যাগ স্বীকার করেন। গর্ভধারণ, দুগ্ধপান ও রাত জেগে সন্তানের তত্ত্বাবধানসহ নানাবিধ কষ্ট একমাত্র মা-ই সহ্য করেন। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আমি মানুষকে মা-বাবার সঙ্গে সদাচারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে অতি কষ্টে গর্ভধারণ করেছে এবং অতি কষ্টে প্রসব করেছে। তার গর্ভধারণ ও দুগ্ধপান ছাড়ানোর সময় লাগে ত্রিশ মাস। অবশেষে যখন সে তার শক্তির পূর্ণতায় পৌঁছে এবং চল্লিশ বছরে উপনীত হয়, তখন বলে- হে আমার রব! আমাকে সামর্থ্য দাও, তুমি আমার ও আমার মা-বাবার ওপর যে নেয়ামত দান করেছো, তার যেনো কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারি। আমি যেনো ভালো কাজ করতে পারি, যা তুমি পছন্দ করো। আমার জন্য তুমি আমার বংশধরদের মধ্যে সংশোধন করে দাও। নিশ্চয়ই আমি তোমার কাছে তওবা করলাম। আমি মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সুরা আহকাফ, আয়াত : ১৫)
মায়ের প্রতি অনুগ্রহের দৃষ্টিতে তাকালে কবুল হজের সওয়াব
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘মা-বাবাই হলো তোমার জান্নাত এবং জাহান্নাম।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২১)
তাই অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যখন কোনো অনুগত সন্তান নিজের মা-বাবার দিকে অনুগ্রহের নজরে দেখে, আল্লাহতায়ালা তার প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে একটি করে কবুল হজের সওয়াব দান করেন।’ (সুনানে বায়হাকি, হাদিস : ৪২১)
বাবার চেয়ে মায়ের মর্যাদা বেশি
মা হিসেবে ইসলামে একজন নারীর অবস্থান অকল্পনীয়। ইসলামে বাবার চেয়ে মায়ের মর্যাদা তিনগুণ বেশি। পবিত্র কোরআনে মায়ের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করে মাকে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করা হয়েছে। এরশাদ হচ্ছে, ‘তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো। তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না এবং পিতামাতার সঙ্গে সুন্দর আচরণ করো।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৩৬)
হে মহান আল্লাহ তায়ালা আমার মা সহ পৃথিবীর সকল মা কে নেক হায়াত দান করিও এবং সবসময় সুস্থ রেখো, সকল বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করিও।
হে মহান আল্লাহ তায়ালা আমার মা সহ পৃথিবীর সকল মা কে নেক হায়াত দান করিও এবং সবসময় সুস্থ রেখো, সকল বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করিও।
আর যাদের মা মারা গেছে তাদের সবাইকে জান্নাতুল ফেরদাউস এর উচ্চ মাকাম দান করিও। আমিন।
Like
Comment
Share
Edit
Like
Comment
Share
0 Comments