লেখক - মাফুজুর রহমান সাহান।


যে ফুল ফুটিল মক্কায়, সুবাসিত করিল সারা জাহান। আল্লাহর হাবিব তিনি মুহাম্মাদ (সাঃ)।

জন্ম ও শৈশবঃ
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রের বনি হাশিম বংশে জন্মগ্রহণ করেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ৫৭০ খৃীস্টাব্দে ১২ই রবিউল আউয়াল সোমবার জন্মগ্রহণ করেন। তার মায়ের নাম আমিনা এবং পিতার নাম আব্দুল্লাহ।
জন্ম নেয়ার পরেই আমেনা দাদা আব্দুল মুত্তালিবকে খবর পাঠান । আব্দুল মুত্তালিব খুশিতে তখনি শিশু মুহাম্মদ (সাঃ) কে কোলে নিয়ে তার নাম রাখেন মুহাম্মদ ।

দুগ্ধ পান কালঃ
সর্ব প্রথম তাঁকে তাঁর মাতা হযরত আমেনা দুগ্ধ পান করান। অতঃপর আবু লাহাবের বাঁদী ‘সুওয়াইবা’ তাকে দুগ্ধ পান করায়। অতঃপর ধাত্রীর সন্ধান করতে থাকেন। ‘হাওয়াযিন’ গোত্রের বানী সা’দ এর মহিলা হালীমা ছা’দিয়া এই বিরল সৌভাগ্যের অধিকারী হন।

দুধপানকালে হালীমা নবী করীম (সাঃ) এর অলৈাকিক ও বরকতময় অনেক র্দশ্য প্রত্যক্ষ করে । বিবি হালিমার বর্ননা সূত্রে ইতিহাসবিদ ইবনু ইসহাক্ব বলেন যে, বিবি হালীমাহ এবং তার স্বামী তার দুগ্ধপোষ্য শিশু সন্তান সহ বনু সা’দ গোত্রের এক দল মহিলার সঙ্গে অর্থের বিনিময় দুধমান করাবে এমন শিশুর সন্ধানে মক্কা যান । বিবি হলিীমাহ বলেন, আমি আমার একটি সাদা মাদী গাধার পিঠে সাওয়ার হয়ে চলছিলাম ।আমার সঙ্গে উটও ছিল । কিন্তু তার উলানেও দুধ ছিল না।  আমার সঙ্গে শিশুটির জন্যও একবিন্দু  দুধ ছিল না আমার বুকে । আর আমাদের সাথে গাধাটি ছিলো দূর্বল তাই আমাদের কাফেলার পিছনে পরে থাকতাম ।

তারপর আমাদের দলে এমন কনো মহিলা ছিল না যে যার কাছে শিশু মুহাম্মদ (সাঃ) কে দুধ পপান করানোর প্রস্তাব দেয়া হয়নি । কিন্তু সকলেই তাকে নিতে অস্বীকার করল । দলের সকল মহিলারা একটি করে শিশু সংগ্র করে নিল বিাকি রইলাম শুধু আমি । পরবরতীতে আমি আমার স্বামীকে বললাম , সকলেই দুধপান করানোর জন্য শিশু নিয়ে ফিরছে আরি আমাকে শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে । তার চেয়ে আমি সেই ইয়াতিম ছেলেকেই নিয়ে ফিরে যাই । 

শিশু মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে যখন তাবুতে ফিরে আসি তারপরে দুজন শিশুই দুগ্ধপানকরতে সক্ষম হন । এবং আমার স্বামী উট দোহন করাতে গিয়ে দেখেন তার ওলান দুধে পরিপূর্ন । বাড়ি ফেরার পথে আমাদের বাহন আর আগের মতন দূর্বল ছিল না । সকলে বলতে লাগলে এটিই কি তোমাদের পূরেবর বাহন ।
আমি বল্লাম হ্যা এটিই সেই বাহন যার সওয়ার হয়ে এসেছিলাম ।
আমাদের বকরীগুলো সবসময় উদর ভরে ঘাস খেয়ে আসতো । এবং আমরা সবাই পরিপূর্নভাবে দুধ দোহন করতাম ।

লালন-পাললনের দু-বছর পুরন হতেই শিশুটি বড় এবং সুঠাম দেহের অধিকারী হয়ে যায় ।

দাদা ও চাচার তত্ত্বাবধানেঃ
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) -এর মাতা-পিতার মৃত্যুর পর দাদা আব্দুল মুত্তালিব তাঁর লালন পালনের দায়িত্ব নেন। তিনি তাকে খুব স্নেহ করতেন। এমনকি নিজের ছেলেদের উপরও তাঁকে প্রাধান্য দিতেন।তাকে নিজের আসনে বসাতেন। দাদা আব্দুল মুত্তালিবের মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্তই তিনি তাঁর তত্ত্বাবধানে ছিলেন।
দাদা আব্দুল মুত্তালিবের মৃত্যুর পর চাচা আবু তালিব তাঁর দায়িত্ব নেন। তখন তার বয়স ছিল আট বছর। তিনি চাচা আবু তালিবকে বকরী লালন-পালন ও শাম দেশের ব্যবসার কাজে সহযোগিতা করতেন। 

খাদিজা (রাঃ) এর সাথে বিবাহঃ
মুহাম্মদ (সাঃ) এর সততা এবং ব্যবসায়ীগুনাগুন দেখে খাদিজা (রাঃ) তাকে বিবাহের জন্য ইচ্ছা করেন । 
তিনি তার মনের বাসনা তাঁর বান্ধবী নাফীসা বিনতে মুনাব্বিহ এর নিকট ব্যক্ত করলেন এবং বিষয়টি নিয়ে মুহাম্মদ (সাঃ) এর নিকট আলোচনার জন্য বললেন ।

নাফীসা বিষয়টি মুহাম্মদ (সাঃ) এর কাছে বললেন এবং মুহাম্মদ (সাঃ) বিষয়টি সম্মতি জানালেন এবং চাচা আবু ত্বালিবকে জানান । আবু ত্বালিব বিষয়টি খাদিজা (রাঃ) পিতৃবের সাথে আলোচনা করে বিয়ের প্রস্তাব দেন।    

নবুওয়াতী লাভ ও প্রথম কুরআন নাযিলঃ
রাসূল (সাঃ) চল্লিশ বছর বয়সে নবুয়াতী লাভ করেন । তিনি মক্কা থেকে দুই মাইল দূরত্বে অবস্থিত (জাবালে নূর) হেরা গুহায় গিয়ে ধ্যানমগ্ন থাকতেন এবং এখানেই প্রথম কুরআনের আয়াত নাযিল হয় ।

জিবরিল (আঃ)- এর আগমনঃ  
তিনি যখন হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় ছিলেন তখন আল্লাহর ফেরেস্তা জিবরাইল (আঃ) আগমন করেন ।
জিবরিল (আঃ) তার নিকট আগমন করে বললেন ‘তুমি পড়” । তিনি বললনে পড়ার অভ্যাস নেই আমার । তিনি আবারও বললেন ‘তুমি পড়” তিনি বললনে পড়ার অভ্যাস নেই আমার। তিনি তৃতীয় বার বুকে জরিয়ে নিলেন , তারপর নিনি আবারও বললেন ‘পড়’  তখন রাসূল (সাঃ) পড়তে শুরু করলেন : 

পাঠ করুন আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন
সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে।
পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু,
যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন,
শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।

ইসলাম প্রচারে আত্ননিয়োগঃ  
নবুওয়াতের পরে তিন বছর গোপনে দাওয়াত কাজ করেন রাসূল (সাঃ) । তার প্রথম অবস্থাতে তিনি তার পরিবারে নিকট দাওয়াত প্রচার করেন । তাদের মধ্যে প্রথম ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন নবীপত্নী খাদিজাতুল কুবরা (রাঃ) বিনতে খুওয়াইলিদ,তার ক্রীতদাস যায়দ বিন হারিসাহ বিন শুরাহবীল কালবী, তার চাচত ভাই ‘আলী বিন আবু ত্বালিব, এবং তার সাওর গুহার সঙ্গী আবু বাক্র সিদ্দীক (রাঃ) । তারপরে আবু বক্র (রাঃ) ইসলাম প্রচারে অনেক গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখেন ।  

সাফা পরবতে আহরন:  রাসূল (সাঃ) সাফা পহারে উঠে বিভিন্ন গোত্রকে ডাকতে থাকেন , এবং বলতে থাকেন, হে কুরাইশ বংশীয়গণ ! তোমরা বল, আজ আমি তোমাদের যদি বলি পর্বতের ইপর প্রান্ত থেকে একদল তোমাদের ইপর হামলা করতে অপেক্ষা করছে তাহলে কি তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে । তারা সবাই উত্তর দিলেন হ্যাঁ । আপনাকে কখনো মিথ্যা বলতে দেখিনি ।

যদি তাই হয় তা হলে শুনে রাখ আমি তোমাদেরকে কঠোর দন্ডের কথা স্বরণ করিয়ে দেয়ার জন্য প্রেরিত হয়েছি । তোমরা নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর এবং আল্লাহর নিকট নিজেকে সপেঁ দাও । সকল গোত্রকে তিনি সতর্ক করেন । 

অব্যাহত মৃতু যন্রণাঃ 
অতঃপর শুরু হল মৃতু যন্ত্রনা । রাসূল (সাঃ) পানিতে দু’হাতে পানি নিয়ে নিজের মুকমন্ডল মুছতে মুছতে বলছিলেন, মৃত্যু যন্ত্রনা একটি অত্যন্ত কঠিন বিষয় ।

রাসূল (সাঃ) আয়শা (রাঃ) এর ঘরে মৃত্যু বরন করেন । থখন তার বয়স হয়েছিল তেষট্রি বছর চার দিন।

কুরআনে মুহাম্মাদের নাম ও উপাধি

"মুহাম্মাদ" সুলুস-এ লিখিত, ইসলামী ক্যালিগ্রাফি

মুহাম্মাদ (/mʊˈhæməd-ˈhɑːməd/)[২৭] নামের বাংলা অর্থ "প্রশংসনীয়" এবং এই নামটি পবিত্র কুরআন শরীফে মোট চারবার এসেছে।[২৮] পবিত্র কুরআনে মুহাম্মাদকে বিভিন্ন উপাধির মাধ্যমে সম্বোধন করা হয়েছে। উপাধিগুলো হলো- নবী, রাসূল, আল্লাহর বান্দা ('আবদ'), ঘোষক ('বশির'),[কুরআন ২:১১৯] সাক্ষী ('শহীদ'),[কুরআন ৩৩:৪৫] সুসংবাদদাতা ('মুবাশ্শীর'), সতর্ককারী ('নাজির'),[কুরআন ১১:২] স্মরণকারী ('মুজাক্কির'),[কুরআন ৮৮:২১] সৃষ্টিকর্তার বার্তাবাহক ('দাঈ')[কুরআন ১২:১০৮] আলোকিত ব্যক্তিত্ব ('নূর'),[কুরআন ০৫:১৫] এবং আলো-প্রদানকারী বাতি ('সিরাজ মুনির')।[কুরআন ৩৩:৪৬]


প্রারম্ভিক জীবনী

মুহাম্মাদের জীবন সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ উৎসগুলো মুসলিম যুগের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতাব্দীর (খ্রিস্টীয় ৮ম ও ৯ম শতাব্দী) লেখকদের ঐতিহাসিক রচনায় পাওয়া যায়।[৩৪] এর মধ্যে রয়েছে মুহাম্মাদের ঐতিহ্যবাহী মুসলিম জীবনীসমূহ। এই গ্রন্থগুলোতে মুহাম্মাদের জীবন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংকলিত রয়েছে।[৩৫]

প্রাচীনতম লিখিত 'সিরাত' (মুহাম্মাদের জীবনী এবং তাঁর উদ্ধৃতি) হলো ৭৬৭ খ্রিস্টাব্দে (১৫০ হিজরি) ইবনে ইসহাক কর্তৃক রচিত "আল্লাহর রসূলের জীবন"। যদিও মূল রচনাটি হারিয়ে গেলেও এই সিরাতটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জীবনীগ্রন্থ হিসেবে প্রচলিত রয়েছে।[৩৬][৩৭] এই গ্রন্থের সংকলনকারী ইবনে হিশাম মুহাম্মাদের জীবনীর প্রস্তাবনায় লিখেছেন যে তিনি ইবনে ইসহাক রচিত জীবনী থেকে অনির্ভরযোগ্য ও অসম্মানজনক বিষয়গুলো বাদ দেন।[৩৮] আরেকটি প্রারম্ভিক ইতিহাসের উৎস হল আল-ওয়াকিদী কর্তৃক রচিত মুহাম্মদের প্রচারাভিযানের ইতিহাস এবং ওয়াকিদির সচিব ইবনে সা'দ আল-বাগদাদির রচনা।[৩৪]

অনেক অভিজ্ঞ ব্যক্তি এই প্রাথমিক জীবনীগুলো নির্ভরযোগ্য হিসাবে গ্রহণ করলেও এই জীবনীগ্রন্থগুলোর নির্ভুলতা নিখুঁত হিসেবে বিবেচিত নয়।[৩৬]

জন্ম

মুহাম্মাদ বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশের বনু হাশিম গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন।[৫৫][৫৬] প্রচলিত ধারণা মতে, তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ আগস্ট বা আরবি রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ জন্মগ্রহণ করেন।[৫৭] প্রখ্যাত ইতিহাসবেত্তা মন্টগোমারি ওয়াট তার পুস্তকে ৫৭০ সাল উল্লেখ করেছেন; তবে প্রকৃত তারিখ উদ্‌ঘাটন সম্ভব হয়নি। তাছাড়া মুহাম্মাদ নিজে কোনো মন্তব্য করেছেন বলে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি; এজন্যই এটি নিয়ে ব্যাপক মতবিরোধ রয়েছে। এমনকি মাস নিয়েও ব্যাপক মতবিরোধ পাওয়া যায়। যেমন, একটি বর্ণনায় এটি ৫৭১ সালের ২৬ এপ্রিল বা রবিউল আউয়াল মাসের ৯ তারিখ হবে; সাইয়েদ সুলাইমান নদভী, সালমান মনসুরপুরী এবং মোহাম্মদ পাশা ফালাকির গবেষণায় এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তার জন্মের বছরেই হস্তী যুদ্ধের ঘটনা ঘটে[৫৮][৫৯] এবং সে সময় পারস্যের সম্রাট খসরু আনুশেরওয়ানের সিংহাসনে আরোহণের ৪০ বছর পূর্তি ছিল এ নিয়ে কারো মাঝে দ্বিমত নেই।

শৈশব ও কৈশোর কাল

মুহাম্মাদ এর পিতা আব্দুল্লাহ তার জন্মের প্রায় ছয় মাস পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন।[৬০] তৎকালীন আরবের রীতি ছিল, তারা মরুভূমির মুক্ত আবহাওয়ায় বেড়ে উঠার মাধ্যমে সন্তানদের সুস্থ দেহ, সুঠাম গঠন এবং বিশুদ্ধ আরবিভাষী[টীকা ২] হওয়ার জন্য জন্মের পরপরই দুধ পান করানোর কাজে নিয়োজিত বেদুইন মহিলাদের কাছে দিয়ে দিতেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর আবার ফেরত নিতেন।[৬১][৬২] এই রীতি অনুসারে মুহাম্মাদকেও হালিমা আস-সাদিয়া'র হাতে দিয়ে দেওয়া হয়।[৬৩] হালিমা ছিলেন বনি সা'দ গোত্রের। আর তৎকালীন আরব বনি সা'দ গোত্র ছিল সর্বাপেক্ষা বিশুদ্ধ ও প্রাঞ্জল আরবিভাষী।[৬২] শিশুকে ঘরে আনার পর হালিমার সচ্ছলতা ফিরে আসে এবং তারা শিশুপুত্রকে সঠিকভাবে লালন-পালন করতে সমর্থ হন। তখনকার একটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য: শিশু মুহাম্মাদ কেবল হালিমার একটি স্তন থেকেই দুধ পান করতেন এবং অপরটি তার অপর দুধভাইয়ের জন্য রেখে দিতেন। দুই বছর লালন-পালনের পর হালিমা শিশু মুহাম্মাদকে মা আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন। কিন্তু এর পরপরই মক্কায় মহামারী দেখা দেয় এবং শিশু মুহাম্মাদকে পুনরায় হালিমার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। হালিমাও চাচ্ছিলেন শিশুটিকে ফিরে পেতে। এতে তার আশা পূর্ণ হল। ইসলামি বিশ্বাস মতে, এর কয়েকদিন পরই একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটে -- একদিন শিশু নবির বুক চিরে কলিজার একটি অংশ বের করে তা জমজম কূপের পানিতে ধুয়ে আবার যথাস্থানে স্থাপন করে দেন ফেরেশতা জিবরাইল ও ফেরেশতা মিকাইল। এই ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে বক্ষ বিদারণের ঘটনা হিসেবে খ্যাত।[৬৪][৬৫]

এই ঘটনার পরই হালিমা মুহাম্মাদকে আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন। ছয় বছর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি মায়ের সাথে কাটান। এই সময় একদিন আমিনার ইচ্ছা হয় ছেলেকে নিয়ে মদিনায় যাবেন। সম্ভবত কোনো আত্মীয়ের সাথে দেখা করা এবং স্বামীর কবর জিয়ারত করাই এর কারণ ছিল। মা আমিনা, ছেলে, শ্বশুর এবং সঙ্গী উম্মে আয়মানকে নিয়ে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মদিনায় পৌঁছেন। তিনি মদিনায় একমাস সময় অতিবাহিত করেন। একমাস পর মক্কায় ফেরার পথে আবওয়া নামক স্থানে এসে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।[৬৩][৬৬] মাতার মৃত্যুর পর দাদা আবদুল মুত্তালিব শিশু মুহাম্মাদকে নিয়ে মক্কায় পৌঁছেন। এর পর থেকে তিনিই মুহাম্মাদের দেখাশোনা করতে থাকেন।[৫৯][৬৩]মুহাম্মাদ এর বয়স যখন ৮ বছর ২ মাস ১০ দিন, তখন তার দাদাও মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তার পুত্র আবু তালিবকে মুহাম্মাদ এর দায়িত্ব দিয়ে যান।[৫৯]

আবু তালিব ব্যবসায়ী ছিলেন এবং আরবদের নিয়ম অনুযায়ী বছরে একবার সিরিয়া সফরে যেতেন। মুহাম্মাদ এর বয়স যখন ১২ বৎসর তখন তিনি চাচার সাথে সিরিয়া যাওয়ার জন্য বায়না ধরেন। প্রগাঢ় মমতার কারণে আবু তালিব আর নিষেধ করতে পারেন না। যাত্রাপথে বুশরা পৌঁছার পর কাফেলাসহ আবু তালিব তাঁবু ফেলেন। সেসময় আরব উপদ্বীপের রোম অধিকৃত আরাবিয়া পেট্রাইয়া রাজ্যের রাজধানী বুশরা অনেক দিক দিয়ে বিখ্যাত ছিল। কথিত আছে, শহরটিতে জারজিস নামক এক খ্রিষ্টান পাদ্রি ছিলেন যিনি বুহাইরা বা বহিরা নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি তার গির্জা হতে বাইরে এসে কাফেলার মুসাফিরদের আপ্যায়ন করেন। এ সময় তিনি বালক মুহাম্মাদকে দেখে শেষ নবি হিসেবে চিহ্নিত করেন।[৬৭]ফিজারের যুদ্ধ যখন শুরু হয় তখন মুহাম্মাদের বয়স ১৫ বছর। এই যুদ্ধে তিনি পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন। অর্থাৎ, তিনি সরাসরি যুদ্ধ না করে নিজ গোত্রের লোকদের অস্ত্রের যোগান দেয়া সহ বিভিন্নভাবে সহায়তা করেন। যুদ্ধের নির্মমতায় তিনি অত্যন্ত ব্যথিত হন। কিন্তু তার কিছু করার ছিল না। সে সময় থেকেই তিনি কিছু একটি করার চিন্তাভাবনা শুরু করেন। তার উত্তম চরিত্র ও সদাচরণের কারণে পরিচিত মহলের সবাই তাকে "আল-আমিন" (আরবি :الامين; অর্থ: "বিশ্বস্ত, বিশ্বাসযোগ্য, আস্থাভাজন") এবং "আস-সিদ্দিক" (অর্থ: "সত্যবাদী") বলে সম্বোধন করতেন।[


নবুয়ত-পূর্ব জীবন

ইসলাম ধর্ম প্রচারের প্রাথমিক দশায় আরবের মানচিত্র

আরবদের মধ্যে বিদ্যমান হিংস্রতা, বিশ্বাসঘাতকতা এবং প্রতিশোধস্পৃহা দমনের জন্য হিলফুল ফুজুলনামক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। মুহাম্মাদ এতে যোগদান করেন ও এই সংঘকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় যে, তরুণ বয়সে মুহাম্মাদের তেমন কোনো পেশা ছিল না। তবে তিনি বকরি চরাতেন বলে অনেকেই উল্লেখ করেছেন। সাধারণত তিনি যে বকরিগুলো চরাতেন সেগুলো ছিল বনু সা'দ গোত্রের। কয়েক কিরাত[টীকা ৩] পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তিনি মক্কায় বসবাসরত বিভিন্ন ব্যক্তির বকরিও চরাতেন। এরপর তিনি ব্যবসায় শুরু করেন। মুহাম্মাদ অল্প সময়ের মধ্যেই এ কাজে ব্যাপক সফলতা লাভ করেন। ব্যবসায় উপলক্ষে তিনি সিরিয়াবুশরাবাহরাইন এবং ইয়েমেনে বেশ কয়েকবার সফর করেন।[৭০] মুহাম্মাদের সুখ্যাতি যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ তা অবহিত হয়েই তাকে নিজের ব্যবসায়ের জন্য সফরে যাবার অনুরোধ জানান। মুহাম্মাদ এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং খাদিজার পণ্য নিয়ে সিরিয়ার অন্তর্গত বুশরা পর্যন্ত যান।

খাদিজা মাইসারার মুখে মুহাম্মাদের সততা ও ন্যায়পরায়ণতার ভূয়সী প্রশংসা শুনে অভিভূত হন। এছাড়া ব্যবসায়ের সফলতা দেখে তিনি তার যোগ্যতা সম্বন্ধেও অবহিত হন। এক পর্যায়ে তিনি মুহাম্মাদকে বিবাহ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি স্বীয় বান্ধবী নাফিসা বিনতে মুনব্বিহরের কাছে বিয়ের ব্যাপারে তার মনের কথা ব্যক্ত করেন। নাফিসার কাছে শুনে মুহাম্মাদ বলেন যে তিনি তার অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানাবেন। মুহাম্মাদ তার চাচাদের সাথে কথা বলে বিয়ের সম্মতি জ্ঞাপন করেন। বিয়ের সময় খাদিজার বয়স ছিল ৪০ আর মুহাম্মাদের বয়স ছিল ২৫ বছর।[৭০] খাদিজার জীবদ্দশায় তিনি আর কোনো বিয়ে করেননি। খাদিজার গর্ভে মুহাম্মাদের ছয় জন সন্তান জন্মগ্রহণ করে, যার মধ্যে চার জন মেয়ে এবং দুই জন ছেলে। তাদের নাম যথাক্রমে কাসিমজয়নবরুকাইয়াহউম্মে কুলসুমফাতিমা এবং আব্দুল্লাহ। ছেলে সন্তান দুজনই শৈশবে মারা যায়। মেয়েদের মধ্যে সবাই ইসলামি যুগ পায় এবং ইসলাম গ্রহণ করে ও একমাত্র ফাতিমা ব্যতীত সকলেই তার জীবদ্দশায়ই মৃত্যুবরণ করে।

মুহাম্মাদ এর বয়স যখন ৩৫ বছর তখন কা'বা গৃহের পুনঃনির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বেশ কয়েকটি কারণে কাবা গৃহের সংস্কার কাজ শুরু হয়। পুরনো ইমারত ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরি করা শুরু হয়। এভাবে পুনঃনির্মাণের সময় যখন হাজরে আসওয়াদ (পবিত্র কালো পাথর) পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হয় তখনই বিপত্তি দেখা দেয়। মূলত কোন গোত্রের সদস্য এই কাজটি করবে তা নিয়েই ছিল কোন্দল। নির্মাণকাজ সব গোত্রের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হাজরে আসওয়াদ স্থাপন ছিল একজনের কাজ। কে স্থাপন করবে এ নিয়ে বিবাদ শুরু হয় এবং চার-পাঁচ দিন যাবৎ এ বিবাদ অব্যাহত থাকার এক পর্যায়ে এটি এমনই মারাত্মক রূপ ধারণ করে যে হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত ঘটার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এমতাবস্থায় আবু উমাইয়া মাখজুমি নামক এক ব্যক্তি একটি সমাধান নির্ধারণ করে যে পরদিন প্রত্যুষে মসজিদুল হারামের দরজা দিয়ে যে প্রথম প্রবেশ করবে তার সিদ্ধান্তই সবাই মেনে নেবে। পরদিন মুহাম্মাদ সবার প্রথমে কাবায় প্রবেশ করেন। এতে সবাই বেশ সন্তুষ্ট হয় এবং তাকে বিচারক হিসেবে মেনে নেয়। আর তার প্রতি সবার সুগভীর আস্থাও ছিল। যা হোক, এই দায়িত্ব পেয়ে মুহাম্মাদ অত্যন্ত সুচারুভাবে সমাধান করেন। তিনি একটি চাদর বিছিয়ে তার উপর নিজ হাতে হাজরে আসওয়াদ রাখেন এবং বিবদমান প্রত্যেক গোত্রের নেতাদের ডেকে তাদেরকে চাদরের বিভিন্ন কোণা ধরে যথাস্থানে নিয়ে যেতে বলেন এবং তারা তা-ই করে। এরপর তিনি পাথর উঠিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন করেন।


নবুয়ত-পূর্ব জীবন

ইসলাম ধর্ম প্রচারের প্রাথমিক দশায় আরবের মানচিত্র

আরবদের মধ্যে বিদ্যমান হিংস্রতা, বিশ্বাসঘাতকতা এবং প্রতিশোধস্পৃহা দমনের জন্য হিলফুল ফুজুলনামক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। মুহাম্মাদ এতে যোগদান করেন ও এই সংঘকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় যে, তরুণ বয়সে মুহাম্মাদের তেমন কোনো পেশা ছিল না। তবে তিনি বকরি চরাতেন বলে অনেকেই উল্লেখ করেছেন। সাধারণত তিনি যে বকরিগুলো চরাতেন সেগুলো ছিল বনু সা'দ গোত্রের। কয়েক কিরাত[টীকা ৩] পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তিনি মক্কায় বসবাসরত বিভিন্ন ব্যক্তির বকরিও চরাতেন। এরপর তিনি ব্যবসায় শুরু করেন। মুহাম্মাদ অল্প সময়ের মধ্যেই এ কাজে ব্যাপক সফলতা লাভ করেন। ব্যবসায় উপলক্ষে তিনি সিরিয়াবুশরাবাহরাইন এবং ইয়েমেনে বেশ কয়েকবার সফর করেন।[৭০] মুহাম্মাদের সুখ্যাতি যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ তা অবহিত হয়েই তাকে নিজের ব্যবসায়ের জন্য সফরে যাবার অনুরোধ জানান। মুহাম্মাদ এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং খাদিজার পণ্য নিয়ে সিরিয়ার অন্তর্গত বুশরা পর্যন্ত যান।

খাদিজা মাইসারার মুখে মুহাম্মাদের সততা ও ন্যায়পরায়ণতার ভূয়সী প্রশংসা শুনে অভিভূত হন। এছাড়া ব্যবসায়ের সফলতা দেখে তিনি তার যোগ্যতা সম্বন্ধেও অবহিত হন। এক পর্যায়ে তিনি মুহাম্মাদকে বিবাহ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি স্বীয় বান্ধবী নাফিসা বিনতে মুনব্বিহরের কাছে বিয়ের ব্যাপারে তার মনের কথা ব্যক্ত করেন। নাফিসার কাছে শুনে মুহাম্মাদ বলেন যে তিনি তার অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানাবেন। মুহাম্মাদ তার চাচাদের সাথে কথা বলে বিয়ের সম্মতি জ্ঞাপন করেন। বিয়ের সময় খাদিজার বয়স ছিল ৪০ আর মুহাম্মাদের বয়স ছিল ২৫ বছর।[৭০] খাদিজার জীবদ্দশায় তিনি আর কোনো বিয়ে করেননি। খাদিজার গর্ভে মুহাম্মাদের ছয় জন সন্তান জন্মগ্রহণ করে, যার মধ্যে চার জন মেয়ে এবং দুই জন ছেলে। তাদের নাম যথাক্রমে কাসিমজয়নবরুকাইয়াহউম্মে কুলসুমফাতিমা এবং আব্দুল্লাহ। ছেলে সন্তান দুজনই শৈশবে মারা যায়। মেয়েদের মধ্যে সবাই ইসলামি যুগ পায় এবং ইসলাম গ্রহণ করে ও একমাত্র ফাতিমা ব্যতীত সকলেই তার জীবদ্দশায়ই মৃত্যুবরণ করে।

মুহাম্মাদ এর বয়স যখন ৩৫ বছর তখন কা'বা গৃহের পুনঃনির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বেশ কয়েকটি কারণে কাবা গৃহের সংস্কার কাজ শুরু হয়। পুরনো ইমারত ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরি করা শুরু হয়। এভাবে পুনঃনির্মাণের সময় যখন হাজরে আসওয়াদ (পবিত্র কালো পাথর) পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হয় তখনই বিপত্তি দেখা দেয়। মূলত কোন গোত্রের সদস্য এই কাজটি করবে তা নিয়েই ছিল কোন্দল। নির্মাণকাজ সব গোত্রের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হাজরে আসওয়াদ স্থাপন ছিল একজনের কাজ। কে স্থাপন করবে এ নিয়ে বিবাদ শুরু হয় এবং চার-পাঁচ দিন যাবৎ এ বিবাদ অব্যাহত থাকার এক পর্যায়ে এটি এমনই মারাত্মক রূপ ধারণ করে যে হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত ঘটার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এমতাবস্থায় আবু উমাইয়া মাখজুমি নামক এক ব্যক্তি একটি সমাধান নির্ধারণ করে যে পরদিন প্রত্যুষে মসজিদুল হারামের দরজা দিয়ে যে প্রথম প্রবেশ করবে তার সিদ্ধান্তই সবাই মেনে নেবে। পরদিন মুহাম্মাদ সবার প্রথমে কাবায় প্রবেশ করেন। এতে সবাই বেশ সন্তুষ্ট হয় এবং তাকে বিচারক হিসেবে মেনে নেয়। আর তার প্রতি সবার সুগভীর আস্থাও ছিল। যা হোক, এই দায়িত্ব পেয়ে মুহাম্মাদ অত্যন্ত সুচারুভাবে সমাধান করেন। তিনি একটি চাদর বিছিয়ে তার উপর নিজ হাতে হাজরে আসওয়াদ রাখেন এবং বিবদমান প্রত্যেক গোত্রের নেতাদের ডেকে তাদেরকে চাদরের বিভিন্ন কোণা ধরে যথাস্থানে নিয়ে যেতে বলেন এবং তারা তা-ই করে। এরপর তিনি পাথর উঠিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন করেন।

নবুয়ত প্রাপ্তি

একাদশ শতাব্দীর পারসিয়ান কুরআনের একটি পৃষ্ঠা

ইসলামিক তথ্যসূত্রানুসারে চল্লিশ বছর বয়সে ইসলামের নবি মুহাম্মাদ নবুয়ত লাভ করেন, অর্থাৎ এই সময়েই সৃষ্টিকর্তা তার কাছে বাণী প্রেরণ করেন। আজ-জুহরি বর্ণিত হাদিস অনুসারে, মুহাম্মাদ সত্য দর্শনের মাধ্যমে ওহী লাভ করেন। ত্রিশ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পর মুহাম্মাদ প্রায়ই মক্কার অদূরে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় কাটাতেন। তার স্ত্রী খাদিজা নিয়মিত তাকে খাবার দিয়ে আসতেন। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, এমনি একদিন ধ্যানের সময় ফেরেশতা জিবরাঈল তার কাছে আল্লাহ প্রেরিত বাণী নিয়ে আসেন[৭৩] এবং তাকে এই পঙ্‌ক্তি কয়টি পড়তে বলেন:

মক্কি জীবন

গোপন প্রচার

প্রকাশ্য দাওয়াত

মক্কায় বিরোধিতার সম্মুখীন

ইথিওপিয়ায় হিজরত

গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ইসলাম গ্রহণ

নির্বাসন

দুঃখের বছর ও তায়েফ গমন

মিরাজ বা উর্দ্ধারোহণ

মদিনায় হিজরত

মাদানি জীবন

স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও সংবিধান প্রণয়ন

মক্কার সাথে বিরোধ ও যুদ্ধ

মদিনার ইহুদিদের সাথে সম্পর্ক

হুদাইবিয়ার সন্ধি

(রাসূল (সাঃ) এর জীবনী কয়েক পৃষ্ঠায় লিখে শেষ করা যাবে না । তারপরেও যতটুক সম্ভব তুলে ধরেছি )