স্কিল ডেভেলপ করার রিসোর্চ যত বাড়তেছে, স্কিল ডেভেলপ করা তত কঠিন হয়ে যাচ্ছে। একইভাবে: গাইডলাইন যত বেশি সহজলভ্য হচ্ছে, গাইডলাইন কাজে লাগানোর পরিমাণ তত কমতেছে। এমনকি: হেল্প পাওয়ার প্লাটফর্ম যত বাড়তেছে, হেল্প এর সংখ্যা না বেড়ে বরং মিম আর ট্রল এর সংখ্যা তত বাড়তেছে।


কিন্তু কেন?

কারণ: সার্চ দিয়েই সেকেন্ডের মধ্যে ওয়ার্ল্ড ক্লাস, টপ কোয়ালিটির রিসোর্চ পেয়ে গেলে আমাদের অবচেতন মনে-- সেগুলার গুরুত্ব কমে যায়। আরে-- আছেই তো, দেখবো তো। এইসব বলে ফেলে রাখি। আবার ইন্টারনেট, ইউটিউব, ফেইসবুক, টিকটক এইগুলা লার্নিং প্লাটফর্ম হিসেবে ডিজাইন করা হয়নি। বরং ডিজাইন করা হয়েছে বিনোদন কনটেন্ট দিয়ে এনগেইজড রেখে তোমার সারাটা দিন খেয়ে দেয়ার জন্য। তাই এইসব প্লাটফর্মে থাকে ৯৫% এন্টারটেইনমেন্ট কনটেন্ট আর চিপাচাপায় থাকে ৫% এডুকেশনাল কনটেন্ট।

এইগুলার চাইতেও বড় সমস্যা: বিনোদনের আনন্দ ইনস্ট্যান্টলি পাওয়া যায়। মাগার স্কিল তো আর ইনস্ট্যান্টলি ডেভেলপ হয়ে যায় না। বিশেষ করে একটা মিনিংফুল স্কিল। লাইফ ডিপেন্ডেবল স্কিল। যে স্কিলের উপর ডিপেন্ড করে তুমি একটা ক্যারিয়ার দাঁড় করাবে। যে স্কিলের উপরে ডিপেন্ড করে একটা লাইফ, একটা ফ্যামিলি চলবে: সেই স্কিলতো আর টাচস্ক্রিন এ টাচ করলেই তৈরি হয়ে যাচ্ছেনা। বরং দিনের পর দিন, মাসের পর মাস। ফোকাস থাকতে হচ্ছে। হার্ডওয়ার্ক করতে হচ্ছে। সেটা করতে মন চায় না। বরং মন চায় বিনোদনে ফেরত যেতে। ইনস্ট্যান্ট আনন্দ পেতে। লংটার্ম ফিউচার গোলটাকে চৌকির তলায় ফেলে রাখতে।

আর যদি সেটা না করে সিরিয়াসলি ইন্টারনেট ইউজ করে স্কিল ডেভেলপ করতে চাও। তাহলে এই সাতটা কাজ করো।

১. প্রথমেই একটা specific, measurable, achievable, relevant, and time-bound (SMART) গোল সেট করো। তারপর সেই বড় গোলটাকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করো। সেগুলা শেষ করার একটা আনকম্প্রোমাইজেবল ডেডলাইন সেট করো। লাইফে যত ঝড় তুফান আসুক না কেন। টার্গেট এবং ডেডলাইন মাষ্ট এচিভ করতে হবে। সেই ডিটার্মিনেশন সেট করো।

২. ডিস্ট্রাকশন ফ্রি লার্নিং সোর্স খুঁজে বের করো। একই সাথে একটার বেশি মেইন সোর্স ফলো করতে যাবে না। বিশেষ করে টুকুর টাকুর: বিক্ষিপ্ত সোর্সের কাছে যাওয়াই যাবে না। কারণ সব টপিক যদি গুগল গুগল করে বের করতে হয়। তাহলে দেখবে তুমি গুগল সার্চের টিউটোরিয়ালে ক্লিক করতেছো না। বরং
ক্লিক করতেছো চিপায় যে বিনোদনের ভিডিও আছে সেটাতে।

৩. যে জায়গাটাতে সবাই ধরা খায়। সেটা হচ্ছে ডেইলি লার্নিং রুটিন নাই। আর একবার দুইবার রুটিন বানালেও সেই রুটিন কে ডেইলি লার্নিং হ্যাবিট এ কনভার্ট করতে পারে না। যার কারণে তিন চারদিন পরে ছেড়ে দেয়। এইখানে তোমাকে খুবই স্পেসিফিক হতে হবে। ঠিক করে রাখতে হবে: সকালে মাষ্ট এতটুকু সময় দিবো। কিছু শিখি আর না শিখি এইটুক এফোর্ট মাষ্ট দিবো। বিকালে এইটুক দিবো। দিতেই হবে। কোন কম্প্রোমাইজ নাই। রাতে এই সময় বসবো।
প্লাস বিনোদন আর ডিস্ট্রাকশনের জন্য দিনের শেষের দিকে একঘন্টা বা দুই ঘন্টা সময় রাখবো। যখন বিনোদনের জন্য একটা স্পেসিফিক টাইম থাকবে তখন বিনোদনকে ফ্রেইম করা তত ইজি হবে। বিনোদনের জন্য টাইম এলোকেট না করলে দেখবে সারাদিনই বিনোদন এ চলে গেছে।

৪. হয় তোমার টপমোস্ট আনন্দের জিনিসটা রিলেটেড স্কিল ডেভেলপ করবে। না হয় তোমার সবচেয়ে আনন্দের জিনিসটাকে এক বছরের জন্য স্যাক্রিফাইস করবে। কারণ গত এক বছর যেমনে চলছো, সামনের একবছরও যদি সেই একইভাবে চলো। তাহলে গত একবছরে যেমন ঘোড়ার আন্ডা পাইছো। সামনের এক বছরও ঘোড়ার আন্ডা পাবে।

৫. রেগুলার তোমার প্রগ্রেস চেক করতে হবে। কিছুটা পিছিয়ে পড়লে এক্সট্রা এফোর্ট দিয়ে এডাপ্ট করতে হবে। সিমিলার মাইন্ডেড, সিরিয়াস মানুষ খুঁজে বের করতে হবে। তাদের সাথে ফ্রেন্ডলি কো-অপারেটিভভাবে একজন আরেকজনের হেল্প করবে।

৬. মিনিমাম ছয় মাস থেকে একবছর সুপার সিরিয়াস থেকে স্কিল এর প্রাথমিক লেভেল ডেভেলপ করে। একটা পোর্টফোলিও বিল্ড করো। সেটা অন্য প্রফেশনালদের সাথে শেয়ার করা। একটা লেভেলে পৌঁছানোর পর নেটওয়ার্কিং করো।

৭. খেয়াল রাখবে-- তুমি ইন্টারনেট এ বাস করবে না। তুমি তোমার জগতে বাস করবে। ইন্টারনেট তোমাকে চালাবে না। তুমি ইন্টারনেট চালাবে। তোমার লাইফের কন্ট্রোল থাকবে তোমার হাতে। ইন্টারনেট বা বিনোদনের হাতে না।

এই সুপার ডুপার লেভেলের হার্ডওয়ার্ক সারা জীবন করতে হবে না। বরং ছয় মাস থেকে একবছর করতে পারলেই দেখবে সিগ্নিফিক্যান্ট একটা গ্রোথ হয়ে গেছে। একটা জাম্প স্টার্ট হয়ে গেছে। তারপর আরো ভালো লাগলে এই সিরিয়াস লেভেল চালাতে থাকবে। আর কম ভালো লাগলে ব্যালেন্সড এপ্রোচ এ চালাবে। কিন্তু চালাতে তোমাকে হবেই। কারণ তোমার জীবন তুমি না চালালে– অন্য কেউ চালিয়ে তোমাকে খাদে ফেলে দিবে।


Mafuzur Rahman Shan. B.Sc. in CSE at Manarat International University.