ভার্সিটিতে যেহেতু ৪ বছর পড়বাই। একটু হইলেও পইড়ো। বাপ-মায়ের টাকা আর নিজের টগবগে যৌবন থেকে ৪ বছর যেহেতু খরচ করবাই। একটু হলেও জায়গামতো খরচ কইরো। যেন চার বছর পরে, ভার্সিটি থেকে বের হয়ে-- "কেন চাকরি পাচ্ছ না" সেই কথা শুনতে শুনতে কানের পর্দা আর মনের পর্দা: দুইটাই যেন ফুটা না হয়ে যায়।
ভার্সিটি লাইফে ক্যারিয়ার এর ভিত্তি গড়া যতটা সহজ। ভার্সিটি থেকে বের হয়ে গেলে ততটাই কঠিন। কারণ-- সময়ের এক ফোঁড় আর অসময়ের দশ ফোঁড়। তাই ভার্সিটি লাইফে হাই জিপিএ, লো প্রেম পিরিতি, ট্রাভেলস ব্লগিং, এন্টারটেইনমেন্ট যত কিছুই করো না কেন। গ্যাপে গ্যাপে এই চারটা জিনিস বগলদাবা করে ফেলবে।
১. ক্যারিয়ার এর টার্গেট সেট করো:
ভার্সিটি লাইফের এক-দেড় বছর যেটা না যেতেই টের পেয়ে যাবে-- তুমি যে সাবজেক্টে পড়তেছো সেই সাবজেক্টের লাইনে তুমি ক্যারিয়ার স্যাটেল করতে চাও। নাকি অন্য কোন লাইনে তোমার ইন্টারেস্ট আছে। সেটা ঠিক করার পর তুমি ফাইনাল করে ফেলবে-- কোন লাইনে তুমি সিরিয়াসলি ক্যারিয়ার গড়তে চাও।
কোন অবস্থাতেই--- এইটা করবো। নাকি ঐটা করবো। এমন কনফিউশন কনফিউশন লুকোচুরি করে করে বছর বছর কাটিয়ে দেয়া যাবে না। দরকার হলে যে যে টপিক নিয়ে তুমি কনফিউজড। সেগুলার এক একটা নিয়ে দুই সপ্তাহ টাইম দিবে। এক্সপ্লোর করবে। মানুষকে জিজ্ঞেস করবে। তারপর বুঝে ফেলবে তুমি কোন লাইনে ভরসা পাচ্ছ। আর তারপরেও সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে: জোর করে হলেও একটা টার্গেটকে ফিক্সড করতেই হবে।
২. স্কিল ডেভেলপ
যে লাইনটা তুমি ঠিক করবে। সেই লাইনের রিসোর্স খুঁজে বের করবে। তোমার চারপাশে দেখবে এই জিনিসগুলো নিয়ে কে কে কাজ করতেছে। তাদের হেল্প নিবে। আর কাউকে না পাইলে ইউটিউবে থেকে খুঁজে বের করবে। রুটিন করে সময় দিবে। মিনিমাম ২ বছর ফাটিয়ে এফোর্ট দিবে। স্ট্রং লেভেলের স্কিল ডেভেলপ করবে। বলার মতো, দেখানোর মতো কিছু করার চেষ্টা করবে। সম্ভব হলে কম্পিটিশন করবে। বা প্রজেক্ট করবে।
৩. মামা খালু জোগাড় করো
শিখতে শিখতেই তুমি অনলাইনে বা অফলাইনে কিছু মানুষ পেয়ে যাবে। যাদের কাছ থেকে তুমি হেল্প নিবে। গাইড নিবে। হতে পারে, তোমার ক্যাম্পাসের কোন সিনিয়র ভাইয়া বা আপু। হতে পারে তোমার ডিপার্টমেন্টের বা ক্যাম্পাসের কোন স্যার। কিংবা অনলাইনের কেউ। তাদের কাছ থেকে গাইডলাইন নিবে। তোমার প্রগ্রেস শেয়ার করবে। কি শিখতেছো। সেটা জানাবে। ফিউচারে এইসব লিংক এবং নেটওয়ার্কিং তোমার কাজে লাগবে। দরকারের সময় এরাই তোমার মামা খালু হয়ে উঠবে।
৪. রেজুমি/পোর্টফোলিও/কমিউনিকেশন
ভার্সিটি থাকা অবস্থায় একটা গুছানো রেজুমি বানিয়ে ফেলবে। তোমার সিনিয়র যারা তুমি যে লাইনে কাজ করতে চাচ্ছ সেই লাইনে অলরেডি কাজ করতেছে তাদের সাথে শেয়ার করবে। লিংকডইন প্রোফাইল বানাবে। এপ্লাই করবে। গ্যাপে গ্যাপে ইংরেজিটা একটু শিখে ফেলবে। ই-মেইল কমিউনিকেশন, বেসিক কিছু সফটওয়্যার (হতে পারে: ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট) এইগুলা শিখে ফেলবে। কীভাবে প্রেজেন্টেশন দিতে হয়। ফর্মালভাবে কথা বলতে হয় সেগুলা প্র্যাকটিস করবে। সম্ভব হলে তোমার কাজগুলো সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবে।
এই কাজগুলো করতে পারলে তুমি অবশ্যই ভার্সিটি লাইফে তোমার ক্যারিয়ার একটা ভিত্তি সেট করতে পারবে।
Mafuzur Rahman Shan. B.Sc. in CSE at Manarat International University.
0 Comments